Skip to content

অ্যাওয়ারওয়েভ-এর সাথে টেকসই পরিবর্তনের অগ্রযাত্রা

Published:

পরিবেশ সংরক্ষণের ব্যাপারে দ্বায়িত্ববোধ থেকে ইউনিলিভার বাংলাদেশ নিজেদের স্বেচ্ছাসেবী প্ল্যাটফর্ম প্রয়াস-এর অধীনে অ্যাওয়ারওয়েভ কার্যক্রমটি চালু করে। এই উদ্যোগটি প্লাস্টিক দূষণ কার্যকরভাবে মোকাবেলায় ভূমিকা রাখতে পরবর্তী প্রজন্মকে শিক্ষাদান ও ক্ষমতায়নের জন্য ডিজাইন করা হয়েছিলো।

জাভেদ আখতার, চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক, স্কুলের শিশুদের সাথে মতবিনিময় করছেন

প্লাস্টিক দূষণের এই বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ আশঙ্কাজনক পর্যায়ে পৌঁছেছে, যেখানে আমাদের সমুদ্রে, স্থলভাগে ও লোকালয়ের ভেতর প্লাস্টিক বর্জ্য জমার হার অভূতপূর্বভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। বর্তমান অবস্থা চলতে থাকলে, ২০৬০ সালের মধ্যে বিশ্বব্যাপী উৎপাদিত প্লাস্টিক বর্জ্যের পরিমাণ প্রায় তিনগুণ বেড়ে যাবে, যা পরিবেশ, বন্যপ্রাণী এবং মানবস্বাস্থ্যের জন্য ভয়াবহ পরিণতি বয়ে আনবে।

এই সংকট মোকাবেলা করতে প্লাস্টিকের ব্যবহার হ্রাস ও তার পুনর্ব্যবহারকে উৎসাহিত করা এবং টেকসই বর্জ্য ব্যবস্থাপনার বিষয়ে সাধারণ মানুষকে সচেতন করা জরুরি। বিশেষ করে বাংলাদেশের মতো দেশে, যেখানে দ্রুত নগরায়নের হার বৃদ্ধির কারণে প্লাস্টিকের ব্যবহার দিন-দিন বেড়েই চলছে- কিন্তু প্লাস্টিকের উৎসে সঠিক পৃথকীকরণ ও অপসারণের ব্যাপারে মানুষের অসচেতনতা সমস্যাটিকে আরো প্রবল করে তুলছে।

অ্যাওয়ারওয়েভ প্রোগ্রাম: একটি সক্রিয় পদ্ধতি

পরিবেশ সংরক্ষণের ব্যাপারে দ্বায়িত্ববোধ থেকে ইউনিলিভার বাংলাদেশ নিজেদের স্বেচ্ছাসেবী প্ল্যাটফর্ম প্রয়াস-এর অধীনে অ্যাওয়ারওয়েভ কার্যক্রমটি চালু করে। এই উদ্যোগটি প্লাস্টিক দূষণ কার্যকরভাবে মোকাবেলায় ভূমিকা রাখতে পরবর্তী প্রজন্মকে শিক্ষাদান ও ক্ষমতায়নের জন্য ডিজাইন করা হয়েছিলো।

শিশু এবং তরুণরাই আমাদের আগামী দিনের ভবিষ্যত। তাই অ্যাওয়ারওয়েভ প্রোগ্রামটি দুটি প্রাথমিক উদ্দেশ্যে তৈরি করা হয়: প্লাস্টিক দূষণের ক্ষতিকর প্রভাব সম্পর্কে শিক্ষার্থীদের সচেতন করা এবং টেকসই বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য বর্জ্য পৃথকীকরণ (সেগ্রিগেশন) এবং পুনর্ব্যবহারের গুরুত্ব সম্পর্কে জানানো। একই সাথে শিক্ষার্থীদের অনুপ্রাণিত করা, যাতে তারা তাদের চারপাশে থাকা মানুষদের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করে প্লাস্টিক দূষণ প্রতিরোধ করতে সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে পারে।

প্রোগ্রাম বাস্তবায়ন এবং কার্যক্রমসমূহ

বিশ্ব পরিবেশ দিবস উপলক্ষ্যে সানসিল্ক, ইয়াং পাওয়ার ইন সোশ্যাল অ্যাকশন (ইপসা) এবং প্রয়াস-এর যৌথ প্রচেষ্টায় ২-৬ জুন, ২০২৪ সালে ঢাকা ও চট্টগ্রামের ১০টি স্কুলে আমরা অ্যাওয়ারওয়েভ কার্যক্রম চালু করি, যা জনসাধারণের সাথে সম্পৃক্ততা এবং টেকসই পরিবেশের প্রতি দৃঢ় প্রতিশ্রুতি প্রদর্শন করে।

এই কার্যক্রমে ইউনিলিভার বাংলাদেশের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক জাভেদ আখতার এবং অর্থ পরিচালক জিনিয়া হকের মতো সিনিয়র নেতৃবৃন্দসহ ৩১ জন স্বেচ্ছাসেবক প্লাস্টিকের অপচনশীল প্রকৃতি এবং বর্জ্য ব্যবস্থাপনার ৩আর (রিডিউস, রিইউজ, রিসাইকেল) নিয়ে আলোচনা করেন।

সেশনগুলোকে তথ্যবহুল ও আকর্ষণীয়ভাবে তৈরি করা হয়, যেন শিক্ষার্থীরা কীভাবে প্লাস্টিক বর্জ্য কমাতে অবদান রাখতে পারে, তার সম্পর্কে ব্যবহারিক জ্ঞান লাভ করতে পারে।

অ্যাওয়ারওয়েভ কার্যক্রমটি চারিদিকে ইতিবাচক সাড়া ফেলেছে, যেখানে স্কুল সেশনের মাধ্যমে প্রায় ১০০০ শিক্ষার্থী এই কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করে, যার প্রভাবে তাদের আশেপাশে সম্ভাব্য ২০,০০০ জনের অধিক মানুষ এই তথ্যগুলোর সংস্পর্শে আসে। এই উদ্যোগটি প্লাস্টিক দূষণ মোকাবেলার প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করা ছাড়াও শিক্ষার্থীদের দৈনন্দিন জীবনে সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ নেয়ার ক্ষমতায়নেও ভূমিকা পালন করেছে।

স্বেচ্ছাসেবক একজন শিক্ষার্থীকে বোতল রিফিল করার জন্য ইউরিফিল মেশিন-এর ব্যবহার নিয়ে দিকনির্দেশনা দিচ্ছেন

আরও টেকসই ভবিষ্যতের পথে

ইউনিলিভার বাংলাদেশ প্লাস্টিক হ্রাস, পুনর্ব্যবহার ও সকলের সহযোগিতার মাধ্যমে প্লাস্টিক দূষণ মোকাবেলায় বদ্ধপরিকর। সকলের অংশগ্রহণ এবং সম্মিলিত পদক্ষেপের ফলে কীভাবে একটি বড় পরিবর্তন শুরু হতে পারে- আমাদের অ্যাওয়ারওয়েভ কার্যক্রম তারই একটি যথাযথ উদাহরণ, যা তরুণ প্রজন্মের ক্ষমতায়নের মাধ্যমে একটি টেকসই ভবিষ্যতের ভিত্তি স্থাপন করছে। টেকসই জীবনযাত্রা ও পরিবেশ সুরক্ষার দায়িত্ব - ইউনিলিভার বাংলাদেশ-এর এই অঙ্গীকার জনসমাজের মধ্যে ক্রমাগতভাবে ইতিবাচক পরিবর্তন আনছে।

Back to top