Skip to content

আমাদের যাত্রা

বাংলাদেশের মানুষের কাছে ‘লিভার ব্রাদার্স’, ‘লাক্স কোম্পানি’ নামে সুপরিচিত ইউনিলিভার ১৯৬২ সাল থেকে এদেশের মানুষের দৈনন্দিন জীবনের অংশ। লাইফবয়, লাক্স, হুইল, সানসিল্ক, ভীম, সার্ফ এক্সেল, গ্লো এন্ড লাভলিসহ আমাদের ব্র্যান্ডের পণ্যগুলি দেশের মানুষের মাঝে অত্যন্ত জনপ্রিয়। আমাদের ব্র্যান্ডের পণ্যগুলির ৯০% এর বেশি আমরা স্থানীয়ভাবে উৎপাদন করে থাকি। জীবনযাত্রা উন্নত, সহজ ও সুন্দর করতে প্রতিদিন প্রতি ১০টির মধ্যে ৯টি বাংলাদেশী পরিবারে ব্যবহৃত হচ্ছে আমাদের ব্র্যান্ডের পণ্য।

ভোক্তাদের জীবনধারার মানোন্নয়ন

নিত্য নতুন উদ্ভাবনের মাধ্যমে ভোক্তাদের জীবনকে আরও সুন্দর, সহজ আর সতেজ করতে অবদান রাখার জন্য ইউনিলিভার বিশ্বব্যাপি সুপরিচিত। বিশ্বের অন্যান্য দেশগুলোর মতো বাংলাদেশেও ভোক্তাদের জীবনমান উন্নত করতে উপযুক্ত, স্মার্ট ও সুবিধাজনক পণ্যের প্রচলন করার সুখ্যাতি রয়েছে ইউনিলিভারের। ইউনিলিভার বাংলাদেশ লিমিটেড (ইউবিএল) বিভিন্ন নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য যেমন শ্যাম্পু (সানসিল্ক), ডিটারজেন্ট (হুইল), ডিশওয়াশার (ভিম), এবং স্কিনকেয়ার সলিউশন (গ্লো এন্ড লাভলি) এর সাথে এদেশের মানুষকে পরিচয় করিয়ে দেয়ার জন্য কৃতিত্বের দাবিদার।

গ্রামীণ স্কুল অ্যাক্টিভেশন প্রোগ্রামের অংশ হিসাবে একজন মহিলা একজন ছাত্রকে লাইফবয় দিয়ে কীভাবে সঠিকভাবে হাত ধুতে হয় তা শেখাচ্ছেন

দেশব্যাপী বিস্তৃতি ও পণ্যের সহজলভ্যতা

দেশের প্রতি প্রান্তে, এমনকি ভৌগোলিকভাবে দুর্গম এলাকাসহ সর্বত্র আমাদের পণ্যগুলির প্রাপ্যতা ও সহজলভ্যতা নিশ্চিত করা আমাদের অন্যতম প্রধান শক্তি। আর তাই, প্রতি ১০টির মধ্যে ৯টি বাংলাদেশী পরিবার প্রতিদিন আমাদের কোনো না কোনো পণ্য ব্যবহার করতে পারে।

মাত্র একজন ডিস্ট্রিবিউটর নিয়ে যাত্রা শুরু করে আশির দশকের মধ্যেই আমরা দেশের সকল জেলায় আমাদের পণ্যের প্রাপ্যতা নিশ্চিত করতে সক্ষম হই। বর্তমানে দেশের প্রতিটি কোণায় অবস্থিত প্রায় ১৩ লক্ষ ক্ষুদ্র বিক্রেতাদের কাছে আমরা আমাদের পণ্য পৌঁছে দিচ্ছি। বিভিন্ন উদ্ভাবনী চ্যানেল ব্যবহার করার মাধ্যমে আমরা গ্রামে বসবাসকারী মানুষদের মাঝেও আমাদের পণ্যের প্রাপ্যতা নিশ্চিত করছি। এমনকি দেশের যে সকল এলাকায় কোনো দোকান নেই- সেই সকল অঞ্চলে ক্ষুদ্র পল্লী উদ্যোক্তাদের সহযোগিতায় আমরা আমাদের পণ্য পৌঁছে দিচ্ছি। এই গ্রামীণ ক্ষুদ্র উদ্যোক্তারা আমাদের মাঝে ‘দ্যুতি’ ও ‘পল্লীদ্যুত’ হিসেবে পরিচিত।

স্কুলগামী বাচ্চাদের উল্লাস করছে এবং একটি পেপসোড্যান্ট ক্যাম্পেইনে অংশগ্রহণ করছে তাদের গ্রুপ ছবি।

ম্যানুফ্যাকচারিং উৎকর্ষ

১৯৬৪ সালে শুধুমাত্র সাবান তৈরির একটি লাইন নিয়ে চালু হওয়া ইউনিলিভার কালুরঘাট ফ্যাক্টরি (কেজিএফ) বর্তমানে দক্ষিণ এশিয়ায় ইউনিলিভারের একটি গুরুত্বপূর্ণ উৎপাদন কেন্দ্র হিসেবে বিকশিত হয়েছে। ইউনিলিভার বাংলাদেশ আধুনিক প্রযুক্তি, নিরাপদ ও পরিবেশবান্ধব উৎপাদন প্রক্রিয়া প্রচলনের পথপ্রদর্শক হিসেবে সমাদৃত। বর্তমানে কেজিএফ এর আধুনিকায়ন এবং একে টেকসই ফ্যাক্টরি হিসেবে গড়ে তোলার কার্যক্রম সহ আমরা আরও ৭টি সহযোগী উৎপাদন কেন্দ্রে আমাদের উৎপাদন কার্যক্রম পরিচালনা করছি। বর্তমানে আমরা আমাদের ৯০% এরও বেশি পণ্য স্থানীয়ভাবে উৎপাদন করছি।

স্বয়ংক্রিয় উৎপাদন বেল্টের টিউবগুলিতে ক্লোজ আপ টুথপেস্ট ঢোকানো হচ্ছে।

মেধা বিকাশ ও মানবসম্পদ উন্নয়ন

ইউবিএল-এ আমাদের প্রগতিশীল সংস্কৃতি কেবল আমাদের কোম্পানির প্রবৃদ্ধিতে নয়; বরং, বাংলাদেশের কর্পোরেট খাতের উন্নয়ন ও বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। উৎকর্ষ, বিকাশ আর প্রগতির প্রতি ইউনিলিভারের অঙ্গীকারের কারণে দেশ-সেরা বিজনেস লিডার তৈরিতে আমরা অবদান রেখেছি। আমাদের কোম্পানিতে কাজ করা অনেকেই বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের, বিভিন্ন খাতের শীর্ষস্থানীয় ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে লিডারশিপ পর্যায়ে কাজ করছেন। ২০১১ সাল থেকে ইউবিএল মোট ১২ বার ‘এমপ্লয়ার অফ চয়েস’ বা দেশের সেরা নিয়োগদাতা প্রতিষ্ঠান হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করেছে। বাংলাদেশের বিভিন্ন খাতের জন্য লিডারশিপ ডেভলাপমেন্ট বা নেতৃত্ব বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখার জন্য ইউবিএল সবার কাছে ‘লীগ অফ ফিউচার লিডারস্‌’ নামে সুপরিচিত।

ইউনিলিভারের কারখানার কর্মীদের ড্রোন শট ইউ আকৃতিতে

ডিজিটাইজেশন

প্রযুক্তিগত উন্নয়ন এবং ডিজিটাল সক্ষমতা বৃদ্ধিতে ধারাবাহিক বিনিয়োগ করার কারণে ইউবিএল প্রযুক্তিগত উদ্ভাবন এবং কার্যক্ষমতায় বাংলাদেশের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় কোম্পানি। ইউবিএল-এ, আধুনিক প্রযুক্তি শুধু ইন্টারনাল প্রসেস অটোমেশন এর কাজে ব্যবহৃত হয় না, বরং তা সকল স্টেকহোল্ডারদের সুবিধা নিশ্চিত করতেও ব্যবহার করা হয়। বাংলাদেশে ডিজিটালাইজেশনের অন্যতম পথিকৃৎ হিসেবে ২০০৩ সাল থেকে আমরা খুচরা বিক্রেতা ও ডিস্ট্রিবিউটরদের ব্যবসায়িক কার্যক্রম স্বয়ংক্রিয় করার উদ্দেশ্যে বিনিয়োগ করে আসছি।

হ্যান্ডহেল্ড ডিভাইস ও মোবাইল প্রিন্টার ব্যবহার থেকে শুরু করে প্রতিনিয়ত আমাদের ডিজিটাল সক্ষমতার সর্বোচ্চ সুবিধাগুলোকে কাজে লাগিয়ে, আমরা আমাদের কাজের প্রক্রিয়াকে সহজ করেছি এবং আরও ক্রেতাদের কাছে পৌঁছানোর লক্ষে কাজ করেছি।

আমরা ডিজিটাল প্রযুক্তি ও ডেটা ভিত্তিক সিদ্ধান্ত-গ্রহণ টুল ব্যবহার করে আমাদের ক্ষুদ্র বিক্রেতাদের পণ্য মজুতের জন্য পুঁজি ব্যবস্থাপনায় সর্বোত্তম সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করেছি। এর ফলে, তারা খুব সহজেই তাদের পুঁজি ব্যবস্থাপন করতে পারছে এবং একই সাথে ভোক্তাদের জন্য স্মার্ট ও সহজ অর্ডারিং সিস্টেম ও কাস্টমার সাপোর্ট দিতে পারছে। ক্ষুদ্র বিক্রেতাদের পাশাপাশি, আমরা আমাদের ডিস্ট্রিবিউটরদের অপারেশনাল ও আর্থিক ব্যবস্থাপনায় ডিজিটাল সক্ষমতা বৃদ্ধি করে তাদের সাহায্য করেছি।

আমরা অনুধাবন করি যে আজকের এই দ্রুত পরিবর্তনশীল সময়ে প্রযুক্তি অপরিসীম ভূমিকা পালন করে, আর তাই ডিজিটাল ট্রান্সফরমেশনে অবিরাম বিনিয়োগ করে আমরা এই ক্ষেত্রে সবসময় আমাদের প্রতিদ্বন্দ্বীদের থেকে এগিয়ে থাকতে চাই। আমাদের কার্যক্রম আরও ভালোভাবে পরিচালনা করার জন্য আমরা বিগ ডেটার মতো প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করছি, যার মাধ্যমে আমরা সহজেই ইনসাইট ব্যবহার করে আমাদের সঠিক পণ্য, সঠিক সময়ে, সঠিক জায়গায়, সঠিক পরিমাণে নিয়ে যেতে পারব।

ডিএফএফ এর স্মার্টফোনে লিভার বাজার অ্যাপ

টেকসই আগামীর প্রত্যয়

শুধু একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান হিসেবে নয়, আমরা আমাদের কোম্পানিকে সবার মাঝে কল্যাণকর ও ইতিবাচক এক সহায়ক শক্তি হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে চাই। আমাদের পণ্যকে ভোক্তাদের কাছে ছড়িয়ে দেয়ার চেয়েও কল্যাণকর, ভালো কিছু করার জন্য আমরা বাংলাদেশের কাছে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।

আমরা সকলের জন্য একটি টেকসই ভবিষ্যৎ গড়ায় বিশ্বাসী। তাই ২০১০ সাল থেকে ইউনিলিভার সাসটেইনেবল লিভিং প্ল্যান (ইউএসএলপি) এর মাধ্যমে আমরা সামাজিক উন্নয়নে সহযোগীতা করে আসছি এবং টেকসই উন্নয়নকে আমাদের সকল কার্যক্রমের মূল কেন্দ্রবিন্দুতে নিয়ে এসেছি। পরবর্তীতে, ২০২০ সালে ইউনিলিভার কম্পাস প্রকাশের মাধ্যমে ইউএলএলপি-কে আরও শক্তিশালী রূপ দেয়া হয়। সময়ের সাথে কম্পাস-কে আরও পরিবর্ধন করা হয় এবং ২০২৩ সালের অক্টোবর মাসে গ্রোথ অ্যাকশন প্ল্যান (গ্যাপ) প্রকাশ করা হয়। কারণ, আমাদের বিশ্বাস আগামীতে সে সকল ব্যবসাই এগিয়ে থাকবে যারা বিশ্বজুড়ে মানুষের জীবনের আমূল পরিবর্তনগুলো ধারণা করতে পারবে ও সেই পরিবর্তন অনুযায়ী সাড়া দিতে পারবে। আমরা নিশ্চিত যে জলবায়ু, পরিবেশ, প্লাস্টিক আর জীবনমান উন্নয়ন এর মত সাস্টাইনেবিলিটির ক্ষেত্রগুলিতে আমাদের সবচেয়ে বেশি কার্যকর ভূমিকা রাখার সুযোগ রয়েছে, এবং এইগুলি নিয়ে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে আমাদের কাজ করার এখনই সময় ।

ইউনিলিভার বাংলাদেশ ২০১৪ সাল থেকেই একটি জিরো ল্যান্ডফিল কোম্পানি। তার পাশাপাশি, ২০২৫ সালের মধ্যে নেট-জিরোর লক্ষ্য অর্জনের মাধ্যমে আমরা আমাদের সাপ্লাই চেইন থেকে কার্বন নিঃসরণ হ্রাস করার লক্ষ্যে বাংলাদেশে কাজ করছি। একইসাথে, জনসচেতনামূলক কার্যক্রম, বিশেষ করে স্কুলের বাচ্চাদের সঠিক নিয়মে হাত ধোয়া, দাঁত মাজার পদ্ধতি শেখানোর মাধ্যমে আমরা জনস্বাস্থ্য উন্নয়নে অবদান রাখছি। পাশাপাশি, ২০০২ সাল থেকে ভাসমান লাইফবয় ফ্রেন্ডশিপ হাসপাতাল (এলএফএইচ) এর মাধ্যমে আমরা বাংলাদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের ১৫ লক্ষেরও বেশি মানুষকে স্বাস্থ্যসেবা দিয়ে যাচ্ছি।

আমরা বর্তমানে আমাদের ওয়াশ, যুব ক্ষমতায়ন, এবং দক্ষতা উন্নয়ন উদ্যোগের সাথে বাংলাদেশের জন্য একটি প্লাস্টিক বর্জ্যমুক্ত ভবিষ্যত গড়তে কাজ করছি। আমাদের প্লাস্টিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কার্যক্রমের মাধ্যমে আমরা ২০২২ সাল থেকে ১০,০০০ টনের বেশি প্লাস্টিক বর্জ্য সংগ্রহ ও রিসাইকেল করেছি। আমাদের টেকসই উন্নয়ন ও সামাজিক উন্নয়ন কার্যক্রমগুলির মাধ্যমে ২০২০ সাল থেকে আমরা বাংলাদেশের ১০ কোটিরও বেশি মানুষের জীবনে ইতিবাচক প্রভাব রাখতে সক্ষম হয়েছি।

একটি ল্যান্ডফিলের সামনে প্রতিরক্ষামূলক পোশাকে একজন পুরুষ প্লাস্টিক বর্জ্য বাছাই কর্মীর ছবি।
Back to top