আমাদের লিডারশিপ
আমাদের লিডারশিপ টিম ব্যবসার স্ট্র্যাটেজি নির্ধারণ, কোম্পানি পরিচালনা ও আমাদের কর্মীদের নেতৃত্ব দেয়ার ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন। আমাদের পরিচালনা পর্ষদ ও ম্যানেজমেন্ট কমিটি সম্পর্কে জানুন।
আমাদের লিডারশিপ টিম ব্যবসার স্ট্র্যাটেজি নির্ধারণ, কোম্পানি পরিচালনা ও আমাদের কর্মীদের নেতৃত্ব দেয়ার ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন। আমাদের পরিচালনা পর্ষদ ও ম্যানেজমেন্ট কমিটি সম্পর্কে জানুন।
ছয় দশকের বেশি সময়ের ঐতিহ্য নিয়ে ইউনিলিভার বাংলাদেশ লিমিটেড (ইউবিএল) দেশের অন্যতম শীর্ষ ফাস্ট মুভিং কনজিউমার গুডস (এফএমসিজি) বা ভোগ্যপণ্য প্রস্তুতকারী কোম্পানি । বাংলাদেশের প্রতি ১০টি পরিবারের মধ্যে ৯টি পরিবার প্রতিদিন আমাদের কোনো না কোনো ব্র্যান্ডের পণ্য ব্যবহার করে। রিন, হুইল, লাক্স, লাইফবয়, গ্লো এন্ড লাভলি, সানসিল্ক, পেপসোডেন্ট সহ জনপ্রিয় ২২টি ব্র্যান্ড নিয়ে আমরা দেশজুড়ে কোটি মানুষের দৈনন্দিন জীবনের অংশ। ব্যবসার প্রবৃদ্ধির পাশাপাশি বাংলাদেশে আমরা মানুষের জীবনযাত্রায় টেকসই উন্নয়নকে সহজ ও স্বভাবজাত করতে চাই। পরিবেশ সংরক্ষণ আর সমাজিক উন্নয়নে ইতিবাচক অবদান রেখে আমরা বাংলাদেশের উন্নয়নের অগ্রযাত্রার গর্বিত সহযাত্রী, কারণ আমরা বিশ্বাস করি, বাংলাদেশের মানুষের জন্য যা ভালো, ইউনিলিভারের জন্যও তাই ভালো।
ইউবিএলের পথচলা বাংলাদেশের আর্থসামাজিক উন্নয়ন আর সংস্কৃতির সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। ১৯ শতকের শুরুর দিকে যখন পরিচ্ছন্নতা আর সুস্বাস্থ্যের অঙ্গীকার নিয়ে ইংল্যান্ড থেকে উপমহাদেশে প্রথম আমাদের পণ্যবাহী জাহাজ এসে পৌঁছে, তখন থেকেই এই অঞ্চলের মানুষের ঘরে-ঘরে আমাদের ব্র্যান্ডের পণ্যগুলি জায়গা করে নেওয়া শুরু করে। ১৯৬২ সালে চট্টগ্রামের কালুরঘাটে একটি সাবান তৈরির ফ্যাক্টরি নির্মাণ শুরু করার মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে লাল-সবুজের এই দেশে ইউনিলিভারের পথচলা শুরু হয়। যুক্তরাজ্যে থেকে যাত্রা শুরু হলেও ১৯৭৩ সাল থেকে ব্যবসা পরিচালনায় বাংলাদেশ সরকারের সম্পৃক্ততার মাধ্যমে ইউবিএলের ৩৯.২৫% শেয়ারের মালিকানা দেশের জনগণের।
চট্টগ্রামের মাত্র একজন ডিস্ট্রিবিউটর এর সাথে কাজ শুরু করে ইউনিলিভার সত্তরের দশক শেষ হওয়ার আগেই বাংলাদেশের সকল জেলায় পৌঁছে যায়। সাবান ব্যবসায় সাফল্যের পথ ধরে ইউবিএল বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রার চাহিদা মেটাতে হেয়ার কেয়ার, হোমকেয়ার, স্কিন কেয়ার ও ওয়াটার পিউরিফিকেশনের মতো নতুন ক্যাটাগরির পণ্য নিয়ে আসে। ইউনিলিভার বাংলাদেশ পার্সোনাল প্রোডাক্ট (পিপি) ফ্যাক্টরি স্থাপন করে এবং এর ফলশ্রুতিতে বেশিরভাগ পার্সোনাল কেয়ার প্রোডাক্ট, যেমন শ্যাম্পু, টুথপেস্ট ইত্যাদি, যা আগে আমদানি করা হতো, সেসব দেশেই উৎপাদিত হতে থাকে। বর্তমানে আমাদের পণ্যের স্থানীয় চাহিদার ৯০% এরও বেশি পণ্য দেশেই উৎপাদিত হয়।
বর্তমানে ইউবিএল প্রায় ১৩ লক্ষ খুচরা বিক্রেতাদের এক নেটওয়ার্কের মাধ্যমে প্রত্যন্ত অঞ্চল সহ দেশের সর্বত্র সাফল্যের সাথে পণ্য পৌঁছে দিচ্ছে।
বাংলাদেশে যাত্রা শুরুর সময় থেকেই দেশের সমাজ ও পরিবেশের উন্নয়নে অবদান রাখার অঙ্গীকার আমাদের কার্যক্রমের অবিচ্ছেদ্দ্য অংশ। আমাদের এই প্রচেষ্টাগুলো ২০১০ সালে বৈশ্বিক ইউনিলিভার সাসটেইননেবল লিভিং প্ল্যান (ইউএসএলপি) ঘোষিত হবার পর একটি সুনিদৃষ্ট কাঠামোর আওতায় আসে। ইউএসএলপির মাধ্যমে আমাদের ব্যবসায়িক লক্ষ্য ও কার্যক্রমকে বৈশ্বিক টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার (এসডিজি) সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ করা হয়। ইউএসএলপি বাস্তবায়নের অভিজ্ঞতার উপর ভিত্তি করে আমরা আমাদের কার্যক্রমকে আরো পরিমার্জিত ও পরিবর্ধন করে পরবর্তীতে ২০২০ সালে আমাদের বৈশ্বিক স্ট্রাটেজি হিসেবে ‘ইউনিলিভার কম্পাস’ প্রকাশ করি।
২০২৩ সালে আমরা কম্পাসকে পরিমার্জিত করে আমাদের নতুন স্ট্র্যাটেজি গ্রোথ অ্যাকশন প্ল্যান (গ্যাপ) ঘোষণা করি। গ্যাপের মাধ্যমে আমরা তিনটি মূল লক্ষ্য অর্জনে কাজ করছি। আমাদের এই তিনটি লক্ষ্য হচ্ছে উচ্চমান সম্পন্ন প্রবৃদ্ধি, সক্ষমতার সহজীকরন ও উন্নয়ন এবং আরও ফলাফল নির্ভর প্রক্রিয়া ও সংস্কৃতি বাস্তবায়ন করা। আমরা বিশ্বাস করি যে এই লক্ষ্যগুলি অর্জনে আমাদের আরও অনেক কিছু করবার আছে। এই লক্ষ্যগুলি অর্জনে প্রাথমিক পর্যায়ে থাকলেও আমরা অত্যন্ত দ্রুততার সাথে, জরুরিভিত্তিতে পদক্ষেপ নেওয়ার মাধ্যমে ইউনিলিভারকে ধারাবাহিকভাবে আরও সফল একটি ব্যবসা হিসেবে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যেতে কাজ করছি। আমাদের ব্যবসায়িক কর্মকান্ডের প্রতিটি পর্যায়ে সাসটেইনেবিলিটি অন্তর্ভুক্ত করবার মাধ্যমে আমরা সবার জন্য একটি উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ গড়বার পাশাপাশি পিপল (মানুষ) আর প্লানেট (পরিবেশ) কে অগ্রাধিকার দিয়ে দায়িত্বশীল ব্যবসায়িক নীতির বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে চাই।
বাংলাদেশে সাসটেইনেবল ম্যানুফ্যাকচারিং এর পথিকৃৎ হিসেবে ইউবিএল ধারাবাহিকভাবে কার্বন নিঃসরণ হ্রাস করতে কাজ করে আসছে। আমাদের আরও একটি লক্ষ্য হচ্ছে বিভিন্ন শহরে প্লাস্টিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা করার মাধ্যমে প্লাস্টিক দূষণ হ্রাসে ভুমিকা রাখা। এই প্রতিশ্রুতি পূরণে আমরা ২০২৩ সাল থেকে আমাদের পণ্যের প্যাকেজিং এ যে পরিমাণ প্লাস্টিক ব্যবহৃত হচ্ছে, তার থেকে বেশি প্লাস্টিক বর্জ্য পরিবেশ থেকে সংগ্রহ ও প্রসেস নিশ্চিত করছি। ২০২০ সাল থেকে আমাদের নেওয়া টেকসই উদ্যোগগুলি বাংলাদেশের ১০ কোটিরও বেশি মানুষের জীবনে অবদান রেখেছে এবং এর মাধ্যমেই বাংলাদেশের উন্নয়নের গর্বিত সহযোগী হিসেবে দেশের মানুষের জন্য আমরা অবদান রাখছি।
সবার জন্য টেকসই জীরনযাত্রা সহজ আর স্বভাবজাত করাই আমাদের পারপাস
আমরা বিশ্বাস করি যে আগামীতে সেই সকল ব্যবসাই এগিয়ে থাকবে যারা বিশ্বজুড়ে মানুষের জীবনযাত্রার আমূল পরিবর্তনগুলো ধারণা করতে পারবে ও সেই পরিবর্তন অনুযায়ী সাড়া দিতে পারবে।
আমরা আরও নিশ্চয়তার সাথে বলতে পারি যে এখনই সঠিক সময় আমাদের টেকসই প্রচেষ্টার প্রতি মনোনিবেশ করার। আমরা চারটি মূল বিষয়কে অগ্রাধিকার দিয়ে আমাদের টেকসই প্রচেষ্টার প্রতি মনোযোগ দিচ্ছি যেখানে আমরা সর্বোচ্চ পরিমাণে প্রভাব বিস্তার করতে পারবঃ জলবায়ু, পরিবেশ, প্লাস্টিক ও জীবনযাত্রা।
আর্থিক ফলাফলের দিক থেকে ইন্ডাস্ট্রির শীর্ষ তিনটি প্রতিষ্ঠানের একটি হিসেবে নিজেদের অবস্থান প্রতিষ্ঠা করবার মাধ্যমে আমরা আমাদের ব্যবসায়িক মডেলের ধারাবাহিকতা আর প্রতিযোগিতা সক্ষমতা প্রদর্শন করব।
আমাদের ব্যবসায়িক সম্ভাবনাকে সম্পূর্ণ রূপে উন্মক্ত ও তরান্বিত করতে আমরা গ্রোথ অ্যাকশন প্ল্যান তৈরি করেছি। এটি দ্রুত প্রবৃদ্ধি, কার্যকারিতা ও সরলীকরণ, এবং আমাদের পারফর্ম্যান্স কালচারকে আরও উন্নত করার একটি রূপরেখা।
আমাদের স্ট্র্যাটেজি ও গ্রোথ অ্যাকশন প্ল্যানের পিডিএফ ডাউনলোড করুন (PDF 106.8 KB)