Skip to content

আমরা আমাদের জলবায়ু পরিবর্তন কর্ম পরিকল্পনা হালনাগাদ করেছি কেন

Published:

ইউনিলিভারের উচ্চাকাঙ্ক্ষী নতুন জলবায়ু সংক্রান্ত লক্ষ্যগুলি আমাদের হালনাগাদ করা ক্লাইমেট ট্রানজিশন অ্যাকশন প্ল্যানে (সিটিএপি) প্রতিফলিত হয়েছে। যাতে ২০২৩ সালের মধ্যে আমরা গভীরভাবে প্রভাব ফেলতে পারি সেই উদ্দেশ্যে আমরা কীভাবে আমাদের প্রচেষ্টাগুলিকে কেন্দ্রীভূত করছি এবং কেন আমরা বিশ্বাস করি যে জলবায়ুর বিষয়ে এখুনি জরুরি পদক্ষেপ গ্রহণ করা দীর্ঘমেয়াদে আমাদের ব্যবসার পক্ষে উপকারী হবে তা দেখুন।

একদল মানুষ চীনের একটি ইউনিলিভার কারখানায় সৌর প্যানেলগুলি পরীক্ষা করছেন

বহু বছর ধরেই ইউনিলিভারের কাছে স্থায়িত্ব গুরুত্ব পাচ্ছে এবং জলবায়ুর পরিবর্তনে প্রতিক্রিয়া জানানো এরই একটি প্রধান অংশ। ২০১৫ সাল থেকে শুরু করে আমরা আমাদের কার্যকরী গ্রিনহাউজ গ্যাস (জিএইচজি) নির্গমন ৭৪% কমিয়েছি। এর প্রধান কারণ হল আমরা নবায়নযোগ্য বিদ্যুৎশক্তির ব্যবহার শুরু করেছি, এবং জলবায়ুর উপরে আমাদের পণ্যের প্রভাবও কমিয়েছি।

তবে, আমরা যখন আমাদের ভ্যালু চেন জুড়ে নেট জিরোতে পৌঁছানোর আমাদের দীর্ঘমেয়াদী উচ্চাকাঙ্ক্ষার কথা ভাবি, তখন দেখি আমরা যে চ্যালেঞ্জগুলির সম্মুখীন হচ্ছি সেগুলির পরিবর্তন হয়ে চলেছে, তাই আমাদের সমাধানগুলিরও পরিবর্তন হওয়া প্রয়োজন। আমরা এমন একটি যুগে প্রবেশ করছি যেখানে কর্পোরেটের জলবায়ু সংক্রান্ত পদক্ষেপগুলি কী হবে এবং কখন সেগুলি গ্রহণ করা হয় তার প্রতি আরও দৃষ্টি দেওয়া হয়। তাই আমাদের এমন কৌশলের বিকাশ করতে হবে যাতে ২০৩০ সাল নাগাদ আমাদের প্রত্যক্ষ নিয়ন্ত্রণের বাইরে নির্গমন অনেকটাই কমিয়ে আনা যায় এবং এর পাশাপাশি আমাদের ব্যবসার বৃদ্ধিও হতে থাকে।

লক্ষ্যের প্রতি আমাদের প্রচেষ্টা যাতে অটুট থাকে তা নিশ্চিত করা

বিগত বছরগুলিতে, কোনটি কাজে দেয় আর কোনটি দেয় না সেই সম্পর্কে আমরা অনেকটাই জেনেছি। আমরা পরিকল্পনা করছি যাতে সেই শিক্ষালব্ধ অভিজ্ঞতার সঙ্গে বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ও উদ্ভাবনের নতুন বিকাশগুলি মিলিত করে এবং অন্যদের সঙ্গে সহযোগিতার মাধ্যমে আমাদের প্রচেষ্টাগুলিকে এমন জায়গায় কেন্দ্রীভূত করা যায় যেখানে এর প্রভাব সবচেয়ে বেশি হবে।

আমাদের ২০২৪ সালের এজিএম-এ ৯৭.৫% শেয়ারহোল্ডারদের সমর্থিত আমাদের হালনাগাদ করা ক্লাইমেট ট্রানজিশন অ্যাকশন প্ল্যান (সিটিএপি)-এ স্বল্প-মেয়াদে নির্গমন হ্রাস করার জন্য আমাদের কৌশলের রূপরেখা দেওয়া হয়েছে, এবং এছাড়াও দীর্ঘমেয়াদে ফল পাওয়ার জন্য পদক্ষেপগুলিরও বর্ণনা করা হয়েছে। এর মধ্যে আছে ২০৩০ সাল নাগাদ আমাদের জিএইচজি নির্গমন হ্রাস করার জন্য সায়েন্স বেসড টার্গেটস উদ্যোগ অনুমোদিত নতুন বিস্তৃত নিকটবর্তী-মেয়াদের বিজ্ঞান-নির্ভর লক্ষ্যগুলি এবং আমাদের ভ্যালু চেন জুড়ে পদক্ষেপের জন্য দশটি ক্ষেত্র।

সিটিএপি বাস্তবিকই গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটি থেকে আমরা বুঝতে পারি যে আমাদের ব্যবসা এবং ভ্যালু চেন জুড়ে নির্গমনের অভিঘাত কোথায়। এখন আমরা সময়-আবদ্ধ ও ব্যয়-নির্দিষ্ট পথনির্দেশিকা পেয়েছি, ফলে আমরা আমাদের প্রত্যেকটি ব্যবসায়িক গ্রুপে পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারব। এর অর্থ হল শক্তির বাজারে আমাদের অস্থিরতার সম্মুখীন কম হতে হবে এবং প্রধান ফসল ও পণ্যগুলির সরবরাহে নিরাপত্তা আরও বেশি থাকবে।

রেবেকা মারমোট, ইউনিলিভারের চিফ সাস্টেইনেবিলিটি অফিসার

জরুরী পদক্ষেপ গ্রহণ করা: বিনিয়োগ থেকে লাভ পাওয়ার বিষয়টি বোঝা

আমাদের সরবরাহ দ্রুততর করার উদ্দেশ্যে, স্বল্প-মেয়াদী লক্ষ্য নির্ধারণ করে, এবং আমাদের নির্গমন হ্রাস করতে যে পদক্ষেপগুলি করা হবে সেগুলিকে আমাদের কৌশলগত পরিকল্পনায় ও বাজেট চক্রের অঙ্গ করে তোলার মাধ্যমে যেভাবে আমাদের ব্যবসায়িক কর্মক্ষমতার মূল্যায়ন করা হয় তার সঙ্গে আমাদের সিটিএপি-কে যুক্ত করতে চাই। আমাদের প্রত্যেকটি ব্যবসায়ীক গ্রুপের লক্ষ্য এবং পদক্ষেপগুলি যাতে তাদের নিজেদের আর্থিক বিকাশের পরিকল্পনার অঙ্গ হয়, তার জন্য আমরা তাদের সঙ্গে সময়-আবদ্ধ ও ব্যয়-নির্দিষ্ট পথনির্দেশিকা তৈরি করার জন্য কাজ করেছি।

আমরা ইতিমধ্যেই ব্যবসাতে কিছু কিছু উপকারিতা দেখতে পাচ্ছি। ২০০৮ সাল থেকে শক্তি দক্ষ প্রকল্পগুলির কারণে ইউনিলিভার ১ বিলিয়ন ইউরোর থেকে বেশি সাশ্রয় করেছে। সাম্প্রতিক বছরগুলিতে আমাদের পুনরুৎপাদনশীল কৃষি প্রকল্পগুলি আরও দ্রুত-কার্যকর সাপ্লাই চেন তৈরিতে সাহায্য করেছে, যার ফলে প্রক্রিয়ায় নির্গমন ও ব্যয় কম হয়েছে।

কিন্তু এই রিটার্নগুলির জন্য অগ্রিম বিনিয়োগ হওয়া প্রয়োজন। আগামী তিন বছরে আমরা আমাদের উৎপাদনে কার্বন-মুক্তকরণ কার্যক্রমে ১৫০ মিলিয়ন ইউরো বিনিয়োগ করব। আমাদের লক্ষ্য হবে আমাদের তাপ ও বিদ্যুৎশক্তি কার্বন-মুক্ত করা। এর ফলে নবায়নযোগ্য শক্তির ব্যবহার বাড়াবে, এবং রেফ্রিজারেশন থেকে নির্গত হওয়া গ্যাসের পরিমাণ ও কমবে। প্রকৃতিকে রক্ষা করার জন্য ইন্দোনেশিয়ায় আমাদের ইউনিলিভার ওলিওকেমিক্যাল কারখানায় ৩২৫ মিলিয়ন ইউরো বিনিয়োগ করছি। বন নিধন-মুক্ত পণ্যের বর্তমান ও ভবিষ্যতের চাহিদা মেটাতে এই পদক্ষেপটি সহায়তা করবে। ২০৩০ সালের মধ্যে আমরা জলবায়ু, প্রকৃতি ও বর্জ্য পদার্থ হ্রাস করার প্রকল্পগুলিতে ১ বিলিয়ন ইউরো বিনিয়োগ করা অব্যাহত রাখব। এই পরিমাণের মধ্যে ২০২৩ সালের শেষ নাগাদ ৩০০ মিলিয়ন ইউরো বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম তা বিনিয়োগ করেছি।

আমাদের প্রচারের ক্ষেত্রে আমাদের আরও পদ্ধতি-ভিত্তিক হতে হবে

আমরা জানি যে লক্ষ্য পূরণের ক্ষেত্রে আমাদের সামনে এখনও অনেক বাধা আছে। এই বাধাগুলির মধ্যে কয়েকটিকে অতিক্রম করতে হলে পদ্ধতিতে বৃহত্তর পরিবর্তন না করে তা সম্ভব নয়। বর্তমান এবং সামনের বছরগুলির জন্য সিটিএপি-তে আমরা যে বিষয়গুলির উপরে নির্ভরশীল সেগুলির রূপরেখা দিয়েছি। তার পাশাপাশি সরকার, নিয়ন্ত্রক সংস্থা, শিল্প ও উপভোক্তাদের সঙ্গে কাজ করে কীভাবে আমাদের এই বাধাগুলির মোকাবেলা করতে হবে, উদ্ভাবন করতে হবে এবং সমাধানগুলির পরিধি বাড়াতে হবে তার বর্ণনাও রূপরেখাতে দেওয়া হয়েছে।

জলবায়ু সংক্রান্ত পদক্ষেপগুলিকে দ্রুততর করতে আমাদের প্রধান সরবরাহকারীদের সঙ্গে সহযোগিতা করতে হবে, রাসায়নিক উপাদানগুলির বিকল্প খুঁজতে বাণিজ্যের সঙ্গে সহযোগিতা করতে হবে, আমাদের অবস্থান এক সারিতে আনার জন্য ট্রেড অ্যাসোসিয়েশনগুলির (PDF 1.39 MB) সঙ্গে সহযোগিতা করতে হবে এবং আমরা যখন আমাদের প্রচার বাড়াব তখন সরকারের সঙ্গে সহযোগিতা করতে হবে। আমাদের গ্রোথ অ্যাকশন প্ল্যানের আওতায় এই সবগুলি আমাদের দীর্ঘস্থায়ী নেতৃত্বের একটি নতুন যুগের দৃষ্টিভঙ্গি আনতে সাহায্য করবে।

আমাদের কণ্ঠস্বরে আরও জোর এনে এবং আমাদের অগ্রগতির সুযোগ ও বাধাগুলির ব্যবস্থাপনা করার শক্তি জোগাড় করার মাধ্যমে আমরা বিশ্বাস করি যে আমরা আমাদের লক্ষ্যগুলির দিকে আমরা আরও দ্রুত গতিতে এগিয়ে যেতে পারব। এইভাবে নেট জিরোতে রূপান্তরকে ত্বরান্বিত করব - এবং একই সঙ্গে আমাদের ব্যবসার জন্য সাফল্যও নিয়ে আসব।

এই কাজ আমাদের একার পক্ষে সম্ভব নয়, অন্যদেরও প্রয়োজন হবে। আমরা এখন পর্যন্ত স্থায়িত্বের দিকে যেভাবে অগ্রসর হয়েছি তার কেন্দ্রে আছে সহযোগিতা - আমার মনে হয় এইভাবেই অগ্রসর হওয়া উচিৎ।

হাইন শুমাখার, ইউনিলিভারের সিইও

ইউনিলিভারের সিইও হাইন শুমাখার এবং চিফ সাস্টেইনেবিলিটি অফিসার রেবেকা মারমোট-এর মধ্যে সিটিএপি, জলবায়ু সংক্রান্ত জরুরি পদক্ষেপ এবং ব্যবসায় তার প্রভাব ব্যাখ্যা করা নিয়ে যে আলোচনা হয়েছিল তা দেখুন।

Back to top