Skip to content

প্রতিটি হৃদয়ে পরিবর্তনের অনুপ্রেরণা

Published:

ইউনিলিভার বাংলাদেশে, আমাদের লক্ষ্য শুধুমাত্র ব্যবসার সীমানায় সীমাবদ্ধ নয়—আমরা চাই প্রকৃত পরিবর্তন আনতে। ২০২৪ সালে, আমাদের এমপ্লয়ী স্বেচ্ছাসেবী উদ্যোগ ‘প্রয়াস’ এর মাধ্যমে আমরা ২,৫০০-এর বেশি মানুষের জীবনে আশার আলো পৌঁছে দিয়েছি—ক্যান্সারে আক্রান্ত শিশুদের পাশে দাঁড়িয়ে, তরুণদের মাঝে সচেতনতা ছড়িয়ে, এবং সুবিধা-বঞ্চিত পরিবারদের পাশে থেকে।

হার্ট-টু-হার্ট মার্কেট ২.০’-এ ইউবিএলের এমপ্লয়ীরা ক্যান্সার আক্রান্ত শিশুদের সঙ্গে একটি আনন্দময় দিন কাটাচ্ছে

স্বেচ্ছাসেবামূলক কাজ ইউনিলিভার বাংলাদেশের পলিসির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। প্রতি বছর ৫টি কর্মদিবস পর্যন্ত সময় ব্যয় করার সুযোগ দেওয়া হয় এমপ্লয়ীদের, যাতে তারা কমিউনিটির জন্য ইতিবাচক কিছু করতে পারে। ২০২৪ সালে, ইউনিলিভার বাংলাদেশের এমপ্লয়ীদের স্বেচ্ছাসেবী উদ্যোগ "প্রয়াস" অসংখ্য মানুষের জীবন ছুঁয়ে গেছে এবং সমাজে তাদের সম্পর্কের বন্ধনকে আরো গভীর করেছে। স্বেচ্ছাসেবক এমপ্লয়ীদের ভালোবাসা ও নিরলস প্রচেষ্টায় চালিত এই উদ্যোগ রমজান মাসে অসহায় পরিবারদের খাবারের ব্যবস্থা করেছে, তরুণদের সাস্টেইনেবেল চিন্তাধারা বিকশিত করেছে এবং ক্যান্সারে আক্রান্ত শিশুদের দেখিয়েছে আশার আলো। প্রয়াস ২,৫০০-এর বেশি মানুষের জীবনে পরিবর্তন এনেছে, যা ইউনিলিভারের লক্ষ্য ও স্নেহের প্রতীক।

হার্ট টু হার্ট মার্কেট: এক হৃদয় থেকে অন্য হৃদয়ে

২০২৪ সালের রমজান মাসের শুরুতে, যখন নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্যবৃদ্ধি মানুষের জীবনকে কঠিন করে তোলে, তখন প্রয়াস “হার্ট-টু-হার্ট মার্কেট” নামে একটি উদ্যোগ গ্রহণ করে, যা রমজান মাসের চিরাচরিত সহায়তা দেওয়ার যে ধারা তাকে নতুন রূপ দেয়। এই উদ্যোগে ইউনিলিভার এমপ্লয়ীরা বিভিন্ন প্রি-লাভ্ড আইটেম - অর্থাৎ নিজেদের ব্যবহৃত প্রিয় পোশাক, বইসহ বিভিন্ন পণ‍্য দান করেন, যা ইউনিলিভার কর্পোরেট অফিসে একটি বিশেষ আয়জিত বাজারে বিক্রয়ের জন্য প্রদর্শিত হয়, যেখান থেকে এমপ্লয়ীরা তাদের পছন্দের জিনিস কিনে এ উদ্যোগে অংশগ্রহণ করেন। এই বাজারের মাধ্যমে একটি চক্রাকার বা পুনঃব্যবহারের সংস্কৃতি গড়ে তোলা হয়, যেখানে পুরোনো সামগ্রী নতুন মানুষের কাছে পৌঁছে নতুন জীবন পায়।

এই হার্ট-টু-হার্ট মার্কেট থেকে প্রাপ্ত অর্থ ৩০০ স্বল্প আয়ের পরিবারের জন্য প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রী কিনতে ব্যবহার করা হয়। পুরো কার্যক্রমে ১৩ জন ইউনিলিভার এমপ্লয়ী স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন এবং একটি প্রাণবন্ত ও সৃজনশীল মার্কেটের আয়োজন করেন। উৎস বাংলাদেশ ও স্প্রিহা বাংলাদেশের সহযোগিতায় স্বেচ্ছাসেবকরা সরাসরি প্রয়োজনীয় খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করেন এবং এই উদ্যোগে অংশগ্রহণের মাধ্যমে তারা মানুষের আনন্দের অংশীদার হতে পারেন।

ইউবিএলের এমপ্লয়ীদের শিশুদের সাথে চিত্রাঙ্কন কার্যক্রমের আনন্দের মুহূর্ত

অ্যাওয়ারওয়েভ: পরিবর্তন শুরু হোক আমাদের থেকেই

মানুষের জীবনে ইতিবাচক প্রভাব রাখতে, বিশ্ব পরিবেশ দিবস ২০২৪-এ প্রয়াস-এর পক্ষ থেকে অ্যাওয়ারওয়েভ কার্যক্রম চালু করা হয়, যা প্লাস্টিক দূষণের প্রতি সচেতনতা বৃদ্ধি করার একটি উদ্যোগ। আমাদের এনজিও পার্টনার ইয়াং পাওয়ার ইন সোশ্যাল অ্যাকশন (ইপসা)-এর সহযোগিতায়, ঢাকা ও চট্টগ্রামের ১০টি স্কুলে এই কার্যক্রম চালানো হয়। ৩১ জন এমপ্লয়ী স্বেচ্ছাসেবক—যার মধ্যে প্রতিষ্ঠানের সর্বোচ্চ পর্যায়েরর লিডাররাও ছিলেন—প্রায় ১,০০০ শিক্ষার্থীকে গল্প ও ব্যবহারিক শিক্ষার মাধ্যমে প্লাস্টিকের ব্যবহার কমানো, পুনর্ব্যবহার ও পুনর্ব্যবস্থাপনা ছাড়াও প্লাস্টিক দূষণের প্রভাব সম্পর্কে সচেতন করেন। এই উদ্যোগের প্রভাব শুধু এখানেই থেমে থাকেনি। শিক্ষার্থীদের মাধ্যমে প্রায় ২০,০০০ মানুষের মাঝেও সচেতনতার বার্তা ছড়িয়ে পড়েছে। অ্যাওয়ারওয়েভ দেখিয়েছে, শিক্ষা আর সচেতনতা ছোট্ট পরিসর থেকে শুরু হলেও ধীরে ধীরে বড় পরিবর্তন আনতে পারে— আমাদের একটি সাস্টেইনেবেল ভবিষ্যতের পথে এগিয়ে নিতে পারে।

অ্যাওয়ারওয়েভ স্কুল কার্যক্রমের সময় ইউবিএল স্বেচ্ছাসেবক ও শিক্ষার্থীদের মাঝে একটি মুহূর্তের ছবি

হার্ট টু হার্ট মার্কেট ২.০

প্রথমবার ভালো সাড়া পাওয়ার পর, 'হার্ট টু হার্ট মার্কেট ২.০' আবারো সবার মাঝে সহযোগিতার চেতনাকে উজ্জীবীত করে। ইউনিলিভার এমপ্লয়ীরা একই ভাবে তাদের ব্যবহৃত প্রিয় জিনিসগুলো দান করে, যা থেকে প্রাপ্ত তহবিল বাংলাদেশ ক্যান্সার এইড ট্রাস্ট (ব্যানক্যাট) -কে দেয়া হয়। ব্যানক্যাট ক্যান্সারে আক্রান্ত বাচ্চাদের সহযোগিতা প্রদানকারী একটি কেয়ার হোম। ইউনিলিভার বাংলাদেশ ও ব্যানক্যাট একসাথে মিলে নিশ্চিত করেছে যে এই তহবিল আগামী এক বছর ধরে শিশু রোগীদের চিকিৎসা, যত্ন এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় খরচে ব্যবহার করা হবে।

এই প্রথমবারের মতো শুধু ইউনিলিভারের এমপ্লয়ীরাই নয়, তাদের সন্তান ও ভাই-বোনেরাও স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে যোগ দিয়েছেন, যা তাদের স্বেচ্ছাসেবী কাজের অভিজ্ঞতা দিয়েছে।

রূপান্তরের এক বছর - লক্ষ্য উপলব্ধি ও যত্ন নিয়ে এগিয়ে চলা

২০২৪ সালের শেষে এসে বলা যায়, প্রয়াস-এর কার্যক্রমের প্রভাব পরিলক্ষিত হয়েছে সমাজের নানা প্রান্তে, যেখানে ইউনিলিভারের এমপ্লয়ীরা প্রমাণ করলেন যে দায়িত্বশীল ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ড শুধু আর্থিক লাভের মধ্যেই আটকে থাকে না—একটি ন্যায, সহানুভূতিশীল ও টেকসই পৃথিবী গড়ে তুলতেও ভূমিকা রাখে। নতুন নতুন আইডিয়া নিয়ে আর মন থেকে কাজ করার মাধ্যমে 'প্রয়াস' প্রমাণ করলো, সবাই মিলে একসাথে এক লক্ষ্যে কাজ করার সম্ভাবনা সুবিশাল। ভবিষ্যতের দিকে তাকিয়ে, ইউনিলিভারের স্বেচ্ছাসেবক এমপ্লয়ীরা উৎসাহ আর ভালোবাসা নিয়ে আরও অনেক ভালো কিছু করবে, বাংলাদেশের মানুষের প্রতিদিনের জীবন আরো আলোকিত ও উজ্জ্বল করবে। কারণ, ইউনিলিভার ও বাংলাদেশের ভালো থাকা, একই সুতোয় গাঁথা।

Back to top