Skip to content

সহযাত্রা: রিজেনারেটিভ এগ্রিকালচারের মাধ্যমে ইতিবাচক পরিবর্তন আনার যৌথ প্রচেষ্টা

Published:

‘সহযাত্রা: কো-ক্রিয়েটিং ইমপ্যাক্ট’ ইউনিলিভার বাংলাদেশ ও আমাদের পার্টনারদের একসাথে জলবায়ু, পরিবেশ, প্লাস্টিক ও জীবনমান উন্নয়নের কার্যক্রমগুলোর গল্প তুলে ধরে - যেখানে দেশীফার্মারের সাথে নেয়া আমাদের যৌথ উদ্যোগ কীভাবে ক্ষুদ্র পর্যায়ের কৃষকদের রিজেনারেটিভ এগ্রিকালচার চর্চায় ক্ষমতায়ন করছে, তা তুলে ধরা হয়েছে।

শাকসবজির ক্ষেতের এরিয়াল ভিউ

ইউনিলিভার বাংলাদেশে, আমরা বিশ্বাস করি, দীর্ঘমেয়াদী টেকসই উন্নয়ন একা অর্জন করা সম্ভব না। এর জন্য দরকার পার্টনারশিপ, ইনোভেশন আর আমাদের কার্যক্রমে অন্তর্ভুক্ত কমিউনিটিগুলোর প্রতি গভীর প্রতিশ্রুতি।

এই ভাবনা থেকেই আয়োজন করা হয় ‘সহযাত্রা: কো-ক্রিয়েটিং ইমপ্যাক্ট’ - একটি ইভেন্ট যেখানে আমাদের পার্টনার, ইন্ডাস্ট্রি সহযোগী, শিক্ষক-গবেষক আর ওপিনিয়ন লিডারদেরকে সঙ্গে নিয়ে আমরা উদযাপন করি ইমপ্যাক্ট কো-ক্রিয়েশন। ইউনিলিভারের গ্রোথ অ্যাকশন প্ল্যান (গ্যাপ) ২০৩০-এর আওতায়, জলবায়ু, পরিবেশ, প্লাস্টিকস ও জীবনমান উন্নয়ন - সাস্টেইনেবিলিটির এই ৪টি পিলারে আমাদের সাথে থাকা প্রতিটি পার্টনারের গল্পেই উঠে এসেছে ইমপ্যাক্ট কো-ক্রিয়েশনের মাধ্যমে ইতিবাচক পরিবর্তন আনার সম্ভাবনা।

পরিবেশ পিলারের আওতায় তুলে ধরা হয় দেশীফার্মারের গল্প - একটি বাংলাদেশি অ্যাগ্রি-টেক সোশ্যাল এন্টারপ্রাইজ যা গ্রামীণ কৃষকদের মাঝে রিজেনারেটিভ এগ্রিকালচারের পদ্ধতি ছড়িয়ে দিতে এবং ইনক্লুসিভ গ্রোথ নিশ্চিতে কাজ করছে।

অফিসার ছাতার নিচে কৃষকদের সাথে ফসলের তথ্য নিচ্ছেন।

এই সহযাত্রার উদ্দেশ্য

ইউনিলিভারে আমরা বিশ্বাস করি, পরিবেশ ও এগ্রিকালচারাল ইকোসিস্টেমের যত্ন ও সংরক্ষণ, পৃথিবীর আলোকিত ও উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করা এবং একইসাথে আমাদের ব্যবসায় উন্নতি নিয়ে আসার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। বৈশ্বিকভাবে, আমাদের ভ্যালু চেইনের ভেতরে ও বাইরে থাকা পরিবেশের সংরক্ষণ ও রিজেনারেশনের লক্ষ্যে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

ক্ষুদ্র পর্যায়ের কৃষকেরা বাংলাদেশের গ্রামীণ অর্থনীতির মেরুদন্ড। কিন্তু বেশিরভাগ কৃষকেই জানেন না মাটির স্বাস্থ্য, জলবায়ু ও কৃষি পদ্ধতি নিয়ে সঠিক তথ্য। ফলে, অনেক অনিশ্চয়তা নিয়ে তাদের সিদ্ধান্ত নিতে হয়। অন্যদিকে জটিল সাপ্লাই চেইন, যেখানে একাধিক মিডেলমান জড়িত, কৃষকের আয় কমিয়ে দেয় এবং ফসল তোলার পর অপচয় বাড়ায়। এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় প্রয়োজন এমন উদ্যোগ—যা পার্টনারশিপ আর কো-ক্রিয়েশনের ভিত্তিতে গড়ে উঠবে।

ক্ষুদ্র পর্যায়ের কৃষকদের জন্য নতুন মডেল

সহযাত্রার বিশেষ আয়োজনে দেশীফার্মারের কো-ফাউন্ডার ও সিইও, সৈয়দ মো. ফাহিম তুলে ধরেন কীভাবে প্রতিষ্ঠানটি ট্রান্সফর্ম-এর সাথে মিলে, ডিজিটাল টুল ও রিজেনারেটিভ এগ্রিকালচার বিষয়ক ইনসাইটের মাধ্যমে কৃষকদের সহায়তা করে একসাথে ইতিবাচক পরিবর্তন আনছে।

ট্রান্সফর্ম এর আওতায়, সাজেদা ফাউন্ডেশন ও ব্রিটিশ এশিয়ান ট্রাস্টের সাথে পার্টনারশিপে তৈরী উদ্যোগ - ট্রান্সফর্ম ক্লাইমেট চ্যালেঞ্জের মাধ্যমে দেশিফার্মার ফান্ডিং ও মেন্টরশীপ এর সহযোগিতা পায়।

এই সহযোগিতা প্রতিষ্ঠানটিকে তার ব্যবসায়িক মডেল উন্নয়ন, কৃষকদের সাথে যোগাযোগ বৃদ্ধি ও পাইলট প্রকল্পকে আরো বিস্তৃত করতে সাহায্য করেছে।

দেশীফার্মার তৈরি করছে একটি ‘সিড টু মার্কেট’ এগ্রি-টেক প্ল্যাটফর্ম, যেখানে ঝামেলাহীনভাবে ফসল উৎপাদন থেকে শুরু করে বাজারে বিক্রি পর্যন্ত কৃষকেরা সহযোগিতা পাবেন। প্রি-হারভেস্টের সময়ে মডেলটির মূল লক্ষ্য হলো কৃষকদের এই প্রকল্পে যুক্ত করা, তথ্য সংগ্রহ করা, ও তাদের জন্য বিশেষভাবে তৈরি করা কৃষি-ভিত্তিক পরামর্শ দেয়া - যা উৎপাদনের মান ও পরিমাণ বৃদ্ধি নিশ্চিত করবে। পোস্ট-হারভেস্টের সময়ে দেশীফার্মার ফসল বাছাই, গ্রেডিং ও প্যাকেজিংয়ে সহযোগিতা করার পাশাপাশি 'ফার্ম টু বিজনেস' সাপ্লাই চেইনে কাজ করছে, যাতে কৃষক ও ক্ষুদ্র পর্যায়ের প্রতিষ্ঠানগুলো সরাসরি ফেয়ার প্রাইস মার্কেটে প্রবেশের সুযোগ পায়।

অনেক দিন ধরেই ক্ষুদ্র পর্যায়ের কৃষকেরা প্রচলিত ফাইনান্সিয়াল সিস্টেমের বাইরে। হাই ইন্টারেস্ট লোনের কারণে অনেকে ঋণের চক্রে পড়ে যান। এই চ্যালেঞ্জকে লক্ষ্য করে দেশীফার্মার পাইলট করেছে কিছু গ্রিন ফাইন্যান্স সল্যুশন , যেমন 'বাই নাও, পে অ্যাট হারভেস্ট' মডেল ও আবহাওয়া-ভিত্তিক বিমা, যা কৃষকদের জলবায়ুগত ঝুঁকির প্রভাব থেকে সুরক্ষা দেয়। এছাড়াও প্রোগ্রামটি ইনক্লুসিভভাবে ডিজাইন করা হয়েছে, যেখানে এখন পর্যন্ত ১,০০০ এর বেশি নারী কৃষকদের ক্ষমতায়ন করা হয়েছে বিশেষ প্রশিক্ষণ ও মার্কেট এক্সেসের মাধ্যমে।

দেশীফার্মার দল স্থানীয় কৃষকদের কাছ থেকে সবজি কিনছেন।

এ পর্যন্ত আমাদের ইমপ্যাক্ট

  • ৩,০০০ কৃষক শিখেছেন রিজেনারেটিভ এগ্রিকালচার পদ্ধতি
  • কৃষক পরিবারবর্গে অন্তর্ভুক্ত ১২,৫০০ জন সহযোগিতা পেয়েছেন
  • ১,০৪৮ জন নারীকে প্রট্রেনিং ও ইনক্লুশনের মাধ্যমে ক্ষমতায়ন
  • উন্নত পোস্ট-হারভেস্ট ম্যানেজমেন্টের মাধ্যমে ৩৯.৮ টন খাদ্য অপচয় কমেছে
  • ১৬.৩ মিলিয়ন লিটার পানি সাশ্রয় হয়েছে টেকসই পদ্ধতিতে
  • উন্নত ফলন আর ন্যায্যমূল্যের কারণে কৃষকের আয় গড়ে ২০% পর্যন্ত বেড়েছে

আগামী দিনের ভাবনা

দেশীফার্মারের সাথে এই পার্টনারশিপ প্রমাণ করে ডিজিটাল প্রযুক্তি, সাস্টেইনেবিলিটি ও সম্মিলিত প্রচেষ্টা, এই তিনটি ক্ষেত্র একসাথে হলেই জাগে অপার সম্ভাবনা। আর এই সহযাত্রা আমাদের মনে করিয়ে দেয়, প্রতিটি পার্টনারশীপ একটি বীজের মতো - সময়ের সাথে সেই বীজ থেকে জন্ম নিতে পারে এমন সব সমাধান, যা গড়ে তুলবে আগামীর টেকসই আর দৃঢ় বাংলাদেশ।



Back to top