লাল-সবুজের এই দেশে আমাদের যাত্রা শুরু হয় ছয় দশকেরও আগে। আজ, আমাদের ব্র্যান্ডগুলো দেশের ১০টি পরিবারের মধ্যে ৯টি পরিবার ব্যবহার করে, তাদের প্রতিদিনের অভ্যাসে ইতিবাচক পরিবর্তন আনে এবং জীবনের মানোন্নয়নে ভূমিকা রাখে। আমরা সবসময় চেষ্টা করি বাংলাদেশী কনজিউমারদের পরিবর্তিত চাহিদার সঙ্গে তাল মেলাতে—উদ্দেশ্যনির্ভর ইনোভেশন আনা, দেশীয় সক্ষমতায় বিনিয়োগ করা এবং এমন একটি দৃঢ় ব্যবসায়িক মডেল তৈরি করা যা বৈশ্বিক অভিজ্ঞতার সঙ্গে স্থানীয় প্রাসঙ্গিকতাকে যুক্ত করে।

বাংলাদেশকে বৈশ্বিক বিনিয়োগের সম্ভাবনাময় গন্তব্য হিসেবে তুলে ধরা
১৭ কোটির বেশি জনগোষ্ঠী, বেড়ে ওঠা মধ্যবিত্ত শ্রেণি এবং উদ্ভাবনী উদ্যোগের প্রবৃদ্ধি—সব মিলিয়ে বাংলাদেশ দ্রুতই এশিয়ার অন্যতম সম্ভাবনাময় মার্কেটগুলোর একটি হয়ে উঠছে।
ব্যারনেস উইন্টরটনের কাছে, আমরা দেশের কনজুমার মার্কেটের একটি বিস্তৃত চিত্র তুলে ধরি, যেখানে দেখানো হয় কিভাবে জীবনধারার পরিবর্তন, আয়ের বৃদ্ধি ও ডিজিটাল গ্রহণযোগ্যতা বাজারে নতুন গতিশীলতা তৈরি করছে। এই আলোচনায় স্পষ্ট হয়ে আসে যে বাংলাদেশ কেবল একটি উদীয়মান অর্থনীতি নয়—এটি একটি গতিশীল, ভবিষ্যমুখী এবং দীর্ঘমেয়াদে টেকসই বিনিয়োগের জন্য প্রস্তুত একটি দেশ।
এক্ষেত্রে ইউনিলিভার বাংলাদেশের অভিজ্ঞতাও আমরা তুলে ধরি। আমরা দেখাই কিভাবে স্থানীয় কনজুমারদের চাহিদা সম্পর্কে আমাদের গভীর অন্তর্দৃষ্টি এবং বৈশ্বিক দক্ষতার সমন্বয়ে আমরা হোম কেয়ার, পারসোনাল কেয়ার, বিউটি অ্যান্ড ওয়েলবিয়িং এবং ফুডস ক্যাটেগরিতে নেতৃত্ব দিয়ে যাচ্ছি।

উদ্ভাবনের মাধ্যমে টেকসই ভবিষ্যতের পথে
এই ভিজিটের কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল একটি ইন্টারঅ্যাকটিভ রোডশো, যেখানে আমরা তুলে ধরেছি টেকসই ভবিষ্যৎ গড়ার পথে আমাদের অঙ্গীকার ও কার্যক্রম। এতে তুলে ধরা হয় আমাদের নেট-জিরো কার্বন এমিশনের রোডম্যাপ, আমাদের প্যাকেজিংয়ে ব্যবহৃত প্লাস্টিকের চেয়ে বেশি প্লাস্টিক সংগ্রহের উদ্যোগ, এবং পরিচ্ছন্নতা কর্মীদের ক্ষমতায়ন ও অন্তর্ভুক্তিমূলক জীবিকার জন্য উদ্ভাবনী মডেল। রোডশোতে আরও উঠে আসে, কীভাবে আমরা পণ্যে ব্যবহৃত প্লাস্টিক কমাতে এবং কনজুমারদের পরিবর্তিত চাহিদা পূরণে উদ্ভাবনী সক্ষমতাকে কাজে লাগাচ্ছি।
ভিজিটের অন্যতম আকর্ষণ ছিল আমাদের ইউরিফিল মেশিন—একটি রিফিল সল্যুশন যা সিঙ্গেল-ইউজ প্লাস্টিক কমাতে সহায়তা করে। এটি ট্রান্সফর্ম প্রকল্পের অংশ—যা যুক্তরাজ্যের ফরেন, কমনওয়েলথ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অফিস (এফসিডিও), ইউনিলিভার এবং ইওয়াই-এর একটি যৌথ উদ্যোগ। এই উদ্ভাবন ইতোমধ্যেই বাজারে ইতিবাচক সাড়া ফেলেছে এবং প্লাস্টিক দূষণের বিরুদ্ধে কার্যকর একটি মডেল হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। এটি কেবল প্রযুক্তিগত সমাধানই নয়, বরং কমিউনিটিতে ইতিবাচক অভ্যাস গঠনের পথও তৈরি করে।

এছাড়া, ভিজিটের অংশ হিসেবে আমাদের কনজিউমার ইনসাইট অ্যান্ড ইনোভেশন সেন্টার (কিক) পরিদর্শন করেন প্রতিনিধি দল। এটি একটি অভিনব কেন্দ্র, যেখানে সাধারণ খুচরা দোকানের পরিবেশ অনুকরণ করে আমরা বাস্তবভিত্তিক কেনাকাটার অভিজ্ঞতা তৈরি করি। এখানে প্রযুক্তি এবং বিহ্যাভিয়ারাল সায়েন্স ব্যবহার করে আমরা কনজুমার ইনসাইট সংগ্রহ করি, যা আমাদের স্থানীয় চাহিদার সঙ্গে ক্রমাগত সংযুক্ত থাকতে সাহায্য করে।
ইউনিলিভার বাংলাদেশ এই ভিজিটের মাধ্যমে শুধু সফল একটি ব্রিটিশ কোম্পানির পরিচয়ই তুলে ধরেনি, বরং বাংলাদেশের টেকসই ও অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নের সম্ভাবনাময় গল্পের অংশ হিসেবেও নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছে।
সফর শেষে ব্যারোনেস উইন্টারটন বলেন, ইউনিলিভার দীর্ঘস্থায়ী বাণিজ্যিক অংশীদারিত্বের প্রকৃত উদাহরণ। একটি ব্রিটিশ প্রতিষ্ঠান যেভাবে বাংলাদেশের উন্নয়ন যাত্রার গুরুত্বপূর্ণ অংশ হয়ে উঠেছে, তা সত্যিই অনুপ্রেরণাদায়ক। তাদের এই যাত্রা শুধু বাণিজ্য নয়—এটি যৌথ সমৃদ্ধি এবং দায়িত্বশীল ব্যবসার গল্প।
আমরা বিশ্বাস করি, উদ্দেশ্যনির্ভর কৌশল, অর্থবহ অংশীদারিত্ব এবং কমিউনিটির প্রতি গভীর অঙ্গীকারের মাধ্যমেই একটি ব্যবসা সত্যিকার অর্থে সাফল্য পায়। বাংলাদেশের অগ্রযাত্রার অংশ হিসেবে, ইউনিলিভার বাংলাদেশ প্রতিশ্রুতিবদ্ধ একটি আরও উজ্জ্বল, স্থিতিশীল ও টেকসই আগামী নির্মাণে কার্যকর ভূমিকা রাখতে।